মিলিটারি একাডেমিতে ঢোকার সাথে সাথে নতুন ক্যাডেটদের মিলিটারি কায়দায় বিশেষ (!) অভ্যর্থনা জানানো হয়।
অভ্যর্থনা বলতে সিনিয়র ক্যাডেটদের ‘হা রে রে…’ কণ্ঠে পরিকল্পিত ধমকা-ধমকি আর ভ্যাবাচাকা খাওয়া নবাগত ক্যাডেটদের টাচ অ্যান্ড ব্যাক, পুশ আপ, সিট আপ আর গলা ফাটিয়ে ‘স্লাম স্যার, স্লাম স্যার…’
এই তুলকালাম রিসিপশনের মাঝেই এক ক্যাডেট বারবার হাত তুলে, ভাই, স্যার, ব্রাদার ইত্যাদি বলে সিনিয়র ক্যাডেটদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু কেউ তার কথা শুনতে আগ্রহী বলে মনে হলো না, বরং তার চিল্লাচিল্লির ফলে দুই-একজন বাড়তি সিনিয়র ক্যাডেটের দৃষ্টি আকৃষ্ট হলো, আর বেচারার পাঙ্গা গেল আরও বেড়ে। অবশেষে সাদা দেওয়ালে পা উপর মাথা নিচে অবস্থায় মারফির সেই পুরাতন লেসনটাই সে আরেকবার নতুন করে শিখল, “যুদ্ধক্ষেত্রে কখনো ভুলেও এনিমির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে যাইও না…!”
যাহোক, অভ্যর্থনা (!) শেষে সিনিয়র ক্যাডেটদের চক্ষু ছানাবড়া! কারণ বারবার গুনবার পরেও সংখ্যায় একজন নবাগত ক্যাডেট বেশি হচ্ছে! ক্যামনে কী? এই অভ্যর্থনার ঠ্যালায় দুই-একজন নতুন ক্যাডেট কম পাওয়া যাচ্ছে সেইটা ঠিক আছে, কিন্তু বেশি হয় ক্যামনে?
সময় বহিয়া যায়, ঘটনার জট খুলে আর খুলে না, তাই ফলিনও আর ব্রেক হয় না। অবশেষে সিনিয়র মোস্ট ক্যাডেট নতুন ক্যাডেট দলের সামনে এসে অনুনয়-বিনয় করে বললেন, “ভাই, তোমাদের মাঝে কে ক্যাডেট নও? প্লিজ, কাম আউট!”
এবার ধীরে ধীরে সে-ই বারবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাওয়া যুবক তার বিধ্বস্ত চেহারা নিয়ে এগিয়ে এলো। স্তম্ভিত সিনিয়র ক্যাডেট তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল, হু আর ইউ?”
“স্যার, আমি বিএমএ সোনালী ব্যাংকের নতুন অফিসার, আজকেই আমার জয়েনিং ছিল…” তারপর কাতর কণ্ঠে বলল, “স্যার, আমি বারবার বলতে চেয়েছি, কিন্তু কেউই তো আমার কথা শুনল না, বরং কথা বলতে গেলেই পাঙ্গা বেড়ে যায়…”
পুনশ্চ
অনেক কোর্সই এই ঘটনা তাদের সময়কার বলে দাবি করেন, কিন্তু আসলে যে কাদের সময়কার তা নিশ্চিত করা যায়নি।
ট্রিভিয়া
ক্যাডেট জীবন সুকঠিন, নিঃসন্দেহে!