করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের মৃতদেহ সৎকারে সতর্কতা-১
https://delhkhan.com/%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%86%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ae%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b9/
সম্প্রতি ভারতের নয়াদিল্লিতে করোনা ভাইরাসের আক্রমণে জনৈক ৬৮ বছর বয়স্কার মৃত্যুর পর স্থানীয় শ্মশান কর্তৃপক্ষ তার মৃতদেহ দাহ করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলে মৃতদেহ সৎকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়। যাহোক, পরে বিষয়টি নিয়ে মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হলে শ্মশান কর্তৃপক্ষ স্থানীয় হাসপাতালের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে সেই মৃতদেহটির শেষকৃত্য সম্পন্ন করে। জরুরি সহায়তা এবং সৎকার কর্মে জড়িতদের ভেতরে এ নিয়ে যেন কোনো বিভ্রান্তি বা আতংক ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে সজাগ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ ব্যাপারে মানুষের ভুল ধারণা দূর করার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে।
যেহেতু সর্দি, হাঁচি ও কাশির সাথে বের হয়ে আসা শ্লেষ্মার মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের জীবাণু ছড়িয়ে পরে তাই কোভিড-১৯ রোগে মারা যাওয়া ব্যক্তির মৃতদেহের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের বিস্তারের আশঙ্কা নেই বললেই চলে। তাছাড়া নিস্প্রান সারফেসে এই ভাইরাস কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েকদিন পর্যন্ত টিকে থাকে, কিন্তু নিজে থেকে ছড়ায় না। তবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের মৃতদেহের ফুসফুসেই এই ভাইরাস রয়ে যাবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই পারতপক্ষে ময়নাতদন্তের জনিত কাটাছেড়া না করাই ভাল। এছারাও মৃতদেহ পোড়ানোর চেয়ে কবরস্থ করাও বেশি নিরাপদ। সর্বোপরি, এমন মৃতদেহ পরিবহন ও সৎকারের সঙ্গে জড়িতদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা জরুরী।
তথ্য-প্রযুক্তিগত উন্নতির কল্যানে অন্যান্য বারের মহামারীর চেয়ে এবারের মহামারীতে আমাদের একটা এডভান্টেজ আছে আর তা হল আমরা চোখের পলকে নলেজ শেয়ার করতে পারছি। কোন দেশ কী করে কিভাবে লাভবান হচ্ছে তা জানতে পারছি খুব সহজেই। হয়ত একারনেই এবারের মহামারীতে যতই দিন যাবে ততই সারাবিশ্বে প্রাণহানির সংখ্যা কমে আসবে। যাহোক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের গাইডলাইন মতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের মৃতদেহ সৎকারে নিম্নলিখিত সতর্কতা অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়ঃ
হাসপাতাল/ আইসোলেশন/ বাড়ি থেকে মৃতদেহ সরানোর সময়ঃ
মৃতদেহে হাত দেবার আগে এপ্রোন, হ্যান্ড গ্লভস, ফেস মাস্ক ও চশমা সহ সম্ভাব্য সব ধরনের পিপিই পরিধান করা।
রোগীর ব্যবহৃত সকল চিকিৎসা সরঞ্জামাদি অপসারনের সাথে সাথে জীবাণুনাশক দ্বারা পরিস্কার করা।
রোগীর বর্জ্য সঠিক নিয়মে অপসারন করা।
মৃতদেহ পরিবহনে বডি ব্যাগ ব্যবহার করা।
কবর নির্বাচনের সময়ঃ
যেকোনো সুপেয় পানির উৎস থেকে ন্যূনতম ৩০ মিটার দূরে কবর নির্বাচন করা।
ওয়াটার লেভেল থেকে কবরের মেঝে ন্যূনতম দেড় মিটার ওপরে থাকা বাঞ্ছনীয়।
কবরের জমে থাকা পানি যেন লোকালয়ে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ থাকা বাঞ্ছনীয়।
মৃতদেহ পরিবহনের সময়ঃ
মৃতদেহ পরিবহনের সময় ধারালো কিছু দ্বারা যেন বডি ব্যাগ ছিড়ে না যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা।
পচা-গলা লাশ পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়মে অন্যান্য যেসকল সর্তকতা নিশ্চিত করা হয়ে থাকে তা নিশ্চিত করা।
মৃতদেহ সৎকারের সময়ঃ
কলেরা ছাড়া অন্যান্য মহামারীতে মারা যাওয়া মৃতদেহ জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কারের বাদ্যবাধকতা নেই।
অযথা ভীর/জমায়েত পরিহার করুন।
স্পর্শ না করে নিকটাত্মীয়দের শেষবারের মত মুখ দেখতে দেয়া যেতে পারে।
মৃতদেহ সৎকারের পরঃ
ব্যবহৃত হ্যান্ড গ্লাভস সঠিক নিয়মে ধ্বংস করা এবং অন্যান্য পিপিই জীবাণুনাশক দ্বারা পরিস্কার করা।
ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া।
মৃতদেহ বহনকারী বডি-ব্যাগ, স্ট্রেচার/কফিন এবং গাড়ি জীবাণুনাশক দিয়ে ভালো করে পরিস্কার করা।
মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবার সহায় হোন!
