“টেস্ট ম্যাচ ক্যান ড্র হয়?”
এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হিটলার অবশেষে তার দেহরক্ষী বাহিনীর প্রধান জে. রোমেলকে ডেকে পাঠালেন।
চলমান পোলিশ ক্যাম্পেইনে যোগ দিতে না পারার দুঃখে রোমেলের মন মেজাজ এমনিতেই খারাপ। তার ওপর হিটলারের এমন বেহুদা ডাউট শুনে একবার ভাবলেন ‘ফুরারসন্দেরজুগ’ ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরে লাফায়া পড়বেন।
কিন্তু দ্রুতই নিজেকে সামলে নিয়ে রোমেল বললেন যে ড্র হওয়া ম্যাচের শেষে ৫০ কিবা ২০ ওভারের একটা টাইব্রেকার চালু করলেই এই সমস্যা আর থাকবে না। হিটলার মনে মনে ভাবলেন, “আরে তাই তো!” কিন্তু মুখে বললেন, “হুম্, আমিও এমনটাই ভাবসিলাম।”
রোমেল বেরিয়ে যেতেই হিটলারের সামরিক সচিব একগাদা ফাইল নিয়ে ভেতরে ঢুকলেন; আসন্ন ফ্রান্স-বেলজিয়াম ক্যাম্পেইনে ৭ম প্যাঞ্জার ডিভিশন কমান্ডার কে হবে তা জানতে।
‘রোমেল! প্যাঞ্জার ডিভিশন কমান্ডার!’ হিটলারের কুইক ডিসিশন শুনে বিস্ময়ে খাবি খেয়ে সামরিক সচিব বললেন, ‘কিন্তু মহামান্য ফুয়েরার, তার নাম তো এই লিস্টেই নাই…’
‘আমি ফুয়েরার, আমি যেই নাম বলি, লিস্ট সেইখান থিকাই শুরু হবে।’
‘জি ফুয়েরার, অবশ্যই। কিন্তু ওর তো র্যাঙ্কে কুলায় না, প্যাঞ্জার ডিভ কমান্ডার হতে রোমেলকে আরও দুইটা র্যানক পেতে হবে…’
‘ওরে ডাবল প্রমোশন দেও।’
‘জি, নিশ্চয়। কিন্তু তার সিনিয়র এত এত ক্যাপাবল অফিসার থাকতে রোমেলই কেন…’
ত্যক্ত-বিরক্ত হিটলার চিবিয়ে জবাব দিলেন, ‘Weil er ein tiebreaker Spezialist ist!’ (কারণ, সে একজন টাইব্রেকার স্পেশালিস্ট!)
ব্যস, কেইস ডিশমিশ, রোমেল হয়ে গেলেন ৭ম প্যাঞ্জার ডিভ কমান্ডার!
পুনশ্চ
রোমেল ফ্রান্স-বেলজিয়াম ক্যাম্পেইনে ছয় দিনে ফ্রান্স দখল আর নর্থ আফ্রিকান ক্যাম্পেইনে ব্রিটিশ জেনারেল ক্লড অচিনলেককে ভচকে দিয়ে সত্যিকার টাইব্রেকার স্পেশালিস্ট বনে গিয়েছিলেন। লোকে তাকে ভালোবেসে ডাকে ‘ডেজার্ট ফক্স’ নামে।
ট্রিভিয়া
১. উপরের পুরা ঘটনাটাই একটা জোক, সিরিয়াসলি নিবেন না।
২. ফুরারসন্দেরজুগ ( Führersonderzug ) ছিল দুইটা রেল ইঞ্জিন আর ১৫ বগির একটা জার্মান ট্রেন; ২য় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের ফিল্ড হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহার হতো। প্রথমে বল্কান ক্যাম্পেইনের সময় এর নাম ছিল ‘আমেরিকা’, কিন্তু পরে আমেরিকা যখন ২য় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানদের প্রতিপক্ষ হয়ে যোগ দিল, তখন এর নাম বদলে রাখা হয় ‘ব্র্যান্ডেনবার্গ।’
৩. যুদ্ধকালীন জরুরতে রোমেল কিন্তু আসলেই এক র্যাঙ্ক স্কিপড হয়ে ডাবল প্রমোশন পেয়ে প্যাঞ্জার ডিভ কমান্ডার হয়েছিলেন।
৪. রোমেল কিন্তু আগে থেকেই আত্মহত্যাপ্রবণ ছিলেন, মানে নজিরে পরবর্তী তার মায়াদয়া কমই ছিল। আর সে কারণেই সম্ভবত তিনি এতটা দুর্ধর্ষ ছিলেন। যাহোক, অবশেষে হিটলারের চক্রান্তের কারণে রোমেল কিন্তু আত্মহত্যা করেই মারা গিয়েছিলেন।
৫. দুই বিশ্বযুদ্ধে দুইবারই জার্মানরা হারু পার্টিতে ছিল।
পুন: পুনশ্চ
আচ্ছা রোমেলকে তো আধুনিক টি-২০ ক্রিকেটের জনক কিংবা প্রবক্তা বলাই যায়, নাকি? যাক, একটা জার্মান প্রবাদ দিয়ে শেষ করি-
“ওষুধ খেলে নাকি সর্দি সারে ৭ দিনে, আর না খেলে লাগে এক সপ্তাহ।
জার্মানরা আসলেই বেশ মজার এক জাত!”